নিস্প্রভ তরুণীর প্রেমে
আমি এক অরুণ দীপ্ত কুমার বলছি,
এ ক'দিন হলো, এক মেয়ের প্রেমে পড়েছি।
সদ্য তালাকপ্রাপ্তা মেয়ে,
বয়স আঠারোর কিছু এপার বা ওপার হবে!
আমি দেখেছি, তার শুষ্ক জলের আঁখি,
দেখেছি, সময় কীভাবে টপটপ করে পড়া চোখের জলও শুষে নেয়!
আমি দেখেছি, আঠারো বছরের যুবতীর মুখের চামড়ায় কীভাবে ভাঁজ পড়ে যায়!
আমি দেখেছি, লজ্জায় পলক পড়া মেয়েটিও কিরূপ পলকহীন তাকিয়ে থাকে!
দেখেছি, বাঁচতে চাওয়া বালিকাটিও আজ কেমন মৃত্যুকামী!
দেখেছি, আঠারোতেই কাজলকালো চুলগুলোও কীভাবে শুভ্রতায় ছেয়ে যায়!
আমি দেখেছি, সেই অবুঝ বালিকাটিরও আজ কী এক ভাবুক চাহনি!
দেখেছি, জলশূন্যতায় কীভাবে খাঁ-খাঁ করে অন্তর মাঠ!
দেখেছি, কামিজ পড়া মেয়েটিও আজ কেমন করে শাড়িটা কোমরেই গোজে নেয়!
আমি দেখেছি, কীভাবে পৃথিবীটা হয়ে পড়ে খুবই সংকীর্ণ!
দেখেছি, পুতুলনাচে নেচে উঠা পিচ্চি মেয়েটিও আজ কেমন ভাবলেশহীন!
দেখেছি, বৃষ্টিতে ভেঁজা বালিকাটিও আজ কেমন বৃষ্টিতেই কেঁপে ওঠে!
আমি দেখেছি, ঘুমে বাবা-বাবা ডাকা মেয়েটিও আজ কিরূপ দুঃস্বপ্নে জেগে ওঠে!
আমি হতে চাই, সেই মেয়েটির ছোট্ট এক টুকরো পৃথিবী,
হতে চাই, মুগ্ধতার এক ফালি হাঁসি।
হতে চাই, আবেগি স্বরের 'এই এসো না বৃষ্টিতে ভিজি' ধ্বনি।
দিতে চাই, এক টুকরো ভালোবাসা,
তন্দ্রায় 'ভালোবসি' বলে স্বর্গীয় এক নিদ্রা।
দিতে চাই, বেঁচে থাকার এক আমৃত্যু স্বাদ,
চাই, মৃত মেয়েটিও তার জীবন ফিরে পাক।
চাই, দু'জনে হাতে হাত ধরে রেললাইনে হাটি,
চাই, বসন্ত বাতাসে উড়া কেশগুলো হাতের কোমল স্পর্শে কানে গোজে দি'।
চাই, শুষ্ক মুখে সেই সূর্যি হাসিটা ফুটে উঠুক,
চাই, ভাঁজ পড়ে চোয়াল দেখা সেই গণ্ডদেশে এক কোমল উষ্ঠ-রেখা ফুটুক।
দিতে চাই, নদীপাড়ে কাঁধে মাথা রেখে, এক উষ্ণ বিকেল।
দিতে চাই, উষ্ঠে উষ্ট বেধে এক জোছনাময় রাত।
চাই, খাঁখাঁ শূন্যতায় প্রাণ ফিরে পেয়ে ভালোবাসায় ভরে উঠুক,
চাই, ঝলসে যাওয়া চোখের পাপড়িতে কারো অপেক্ষায় কাজল পড়ুক।
চাই, ফিরে পাক তার হারানো সেই স্নিগ্ধ কুমারিত্ব,
চাই, ভালোবাসায় ছেয়ে যাক তার প্রতিটি মুহূর্ত,
পৃথিবী হয়ে উঠুক ভালোবাসার এক উর্বর নক্ষত্র!!
Comments
Post a Comment