Adcash

আবার এসো ফিরে

 নয়টি মাস হলো প্রায়,

দেখা হয় না আমার অরণ্য আর  

পাহাড়ে ঘেরা সেই প্রিয় ক্যাম্পাসের সাথে। 

পাখির কিচিরমিচির সুরের ঘুমভাঙা ডাক,

সকালে নাস্তা করা চাকসু ক্যন্টিন, কলা ঝুপড়ি 

আর লেডিস ঝুপড়ির মতো সেই প্রিয় ক্যান্টিনগুলি।

চা খাওয়া হয় না বসে চারবেঞ্চি আজীজ ভাইয়ের দোকানে। 


জিরো পয়েন্টের সোডিয়াম আলোর নিচে 

গান হয় না আর গলা ফাটিয়ে সেই কবে থেকে, 

আড্ডা হয় না বসে প্রিয় গিটারে শহিদমিনারের মূলে,

আবৃত্তি হয় না কতোদিন সবুজে ঘেরা বুদ্ধিজীবী চত্বরে।

কাটাপাহাড়ের পথে ভোরের শিশিরে আলতো হাতে 

ছুঁয়েছিলাম সেই কবে, ভুলেই গেছি।

পেটের ভুখে শাহজালাল হলের ডাইনিংয়ে 

ডালের বোলে ভুল করে হাত ধুঁয়া হয় না কতোদিন

একবার তো এক সিনিয়র ভাইয়ের ভ্রু কুঁচকানো কপাল 

আর চোখ রাঙানো ধমকও খেয়েছিলাম। 


শুনা হয় না সেন্ট্রালফিল্ডের বিএনসিসি সৈনিকদের সেই ঝাঁঝালো কুচকাওয়াজ।

ছাতা হাতে বৃষ্টিভেঁজা পথ, অরণ্যে আচ্ছাদিত মাঠ, ফরেস্ট্রির ফুলের ঘ্রাণ, মায়াহরিণ, 

মায়াবী চোখে তাকিয়ে থাকা সেই বন্যবানর কতোদিন দেখি না।

স্বাদ নেই না গাছপাকা কলা, হলের পেছনের আমগাছের আম আর 

তিনরাস্তার মোড়ের বড়ই গাছটার কোনো বড়ইয়ের স্বাদ।

কতোদিন হলো দেখি না বায়োলজি ফ্যাকাল্টির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সুউচ্চ পাহাড়।


চোখে পড়ে না শাড়ির ভাঁজে পাহাড়ি ক্যাম্পাসী সিনিয়র আপুদের অপার সৌন্দর্য। 

মনে পড়ে সেই শাটলট্রেনের কথা,

কতো অপরিচিতার চোখে পড়ত চোখ, 

লজ্জায় ভাড়ে নুয়ে পড়ত আমার সলাজ মুখটি।

কখনো শাটলট্রেনে আমার সামনে বসা তন্দ্রাচ্ছন্ন অপরূপার মুখখানা একে দিতাম কবিতার ছন্দেই আর চেয়ে থাকতাম অপলক। 

বসন্ত আসত যখন, মাথায় ফুলের চাকতিতে আমার প্রাণ হাসত, 

শাড়ি-পাঞ্জাবীর আঁচলের নিবন্ধনে বেঁধে রাখতাম মন।

বৈশাখী হাওয়ায় উড়তো শিমুলগাছের ফল,

চারিদিকে খাঁখাঁ রোদ্দুর, আমি থাকতাম চেয়ে 

রেললাইনের পাশে ক্ষেতের আলে হাসিমুখো কৃষক পানে।


অথচ, আজ বছর খানেক হলো, 

দেখা নেই কারো, কেউ নেই আজ।

হাসিমাখা বন্ধুর মুখ, শাসন করা স্যার, 

চায়ের কাপে মুচকি হাসি, হাসলে গালে টোল পরা বান্ধবীটার।

জানি না, দেখা হবে ফের কবে, তোমাদের সাথে।

পৃথিবী সুস্থ হলে আবার এসো ফিরে?


 

"আবার এসো ফিরে'

রেদ্ওয়ান আহমদ

Comments

Popular Posts