উড়োচিঠির অনুরোধ
হলি অন্য কারো পরিবার।
এ ক'দিন আগেও তুই ছিলি আমার ভালো থাকার মন্ত্র,
আর এখন, আমি হলাম এক অনাবিষ্কৃত যন্ত্র।
তোর কি মনে পড়ে ভার্সিটির সেই পুকুর পাড়ের কথা,
পা দুলিয়ে জল ছিটানো খেলা?
মনে পড়ে, কখনো আমি মন খারাপ করে বসে থাকলে-
তুই আমার হাতটা আলতো করে চেপে ধরতিস?
জানিস, আমার না খুব মনে পড়ে সেদিনকার কথাগুলো!
মনে পড়ে তোর সেই বাতাসে উড়া ভেজা চুলের ঘ্রাণ,
গালে টোল পড়া হাসি।
জানি, তুই এখন অন্য কারো আকাশ ছুঁয়া স্বপ্ন,
বাতাসে মিশে থাকা প্রাণশ্বাস।
আচ্ছা, সে কি তোর সেই ফাঁকা দাতের হাসির প্রসংশা করে?
যে হাসিটায় তুই আমাকে আগলিয়ে রাখতিস।
সেও কি তোর বাঁকা নাকের ভ্যঙচি দেখতে চায়?
বাতাসে উড়া কেশগুলো হাতের স্পর্শে কানে ঠেলে দেয়?
পান খেয়ে কখনো ঠোঁট লাল করে বলিস, লিপস্টিক?
আমার কাঁধে মাথা রেখে যে বলতিস, ভালোবেসে যাবি চিরকাল।
সেই কথাটা কি আর তোর মনে বাজে?
নদী পাড়ে হেঁটে হেঁটে বাতাসে উড়োচিঠি লিখিস?
আচ্ছা, আমার মতো তাকেও হাতে খাইয়ে দিস?
তোর ওই চোখের জলের অভিমান কি সেও বুঝে?
চোখে চোখে কথা বলিস?
সেও কি সেই মিস্টি ঝগড়া করে?
কানে দুল পরিয়ে নাড়িয়ে দেয়?
তার কাছেও কি তাজা কনকচাঁপা আর লাল চুড়ি, টিপের অনুরোধ করিস?
যেটা হাতে না পেলে তুই আমার থেকে দিব্যি মুখ ফিরিয়ে রাখতিস।
বিকেল বেলা পার্কে বসে কি আর সেই ট্রুথ-ড্যায়ার খেলিস?
সেও কি আর দিব্যি তোকে আলতা পরিয়ে দেয়?
ভালোবেসে বুকে টেনে নেয়?
জানিস, আমি আর হয়তো বেশিদিন নেই।
আর জানি না, তুই কেমন আছিস, কীভাবে আছিস।
আমার চোখের নোনা জলে তোকে করলাম সাতার কাটার নেমন্ত্রণ।
ঠিক সময় আসিস। দিয়ে যাস আমার আহবে একমুঠো মাটি।
আমি না হয় নাই কিছু পেলাম। ইতিহাস তো পাবে সেই একমুঠো মাটি।
তাই, পাঠিয়ে দিলাম তোর ঠিকানায় আমার এই এক টুকরো উড়োচিঠি।
~ রেদ্ওয়ান আহমদ
Comments
Post a Comment