Adcash

মুবা মিয়া

পর্বঃ- পঞ্চম পর্ব


চেয়ারম্যান নির্বাচনের আর মাত্র মাস দু'য়েক বাকি। নিজেদের শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করাই এখন প্রার্থীদের প্রধান কাজ। 

মহেশপুর, দূর্গাপুর আর আমজাদপুর, এই তিন গ্রাম মিলে হলো ১৫ নং আমজাদপুর ইউনিয়ন। 

মহেশপুর আর দূর্গাপুর গ্রাম আমজাদপুর গ্রাম থেকে ছোট হলেও প্রায় বিশ বছর যাবৎ আজমাদপুরে কোনে চেয়ারম্যান ধরে রাখতে পারছে না তারা৷ রাখবেই বা কীভাবে? প্রতিবছর একি গ্রাম আমজাদপুর থেকে বহুপ্রার্থী মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে। 

আর দূর্গাপুর ও মহেশপুর থেকে মাত্র এক জন করে প্রার্থী দাড় করায়। 

এবারও আমজাদপুরের কোনো সম্ভাবনা নেই। মুন্সিগোষ্ঠী, তালুকদার গোষ্ঠী এবং মাতব্বর গোষ্ঠী থেকে ক্রমান্বয়ে আলতাফ মুন্সি, রমজান তালুকদার ও কাদের মাতব্বর নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে। টাকা ও বংশের বড়াইয়ে আমজাদপুরে কেউ কাউকে এক চুল পরিমানও ছাড় দেয় না৷ নিজে না খাইতে পারলে অন্যকে খাইতে দিবে না, এ ট্রেন্ড যে এখনও চালু আছে, তার প্রমান এই আমজাদপুর গ্রামই। 

গত চেয়ারম্যান মহেশপুর থেকে জিতেছিলো। আর সেই মহেশপুরের চেয়ারম্যান ধনঞ্জয় রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ উঠায় তার পরিবর্তে এবার তার ছোটভাই শংকর রায় চৌধুরী নির্বাচন করছে। তবুও সবার ধারণা এবারের চেয়ারম্যান দূর্গাপুরেই যাবে। 

চায়ের দোকানগুলোতে রমরমা ব্যবসা চলছে। কেউ কেউ মাত্র মাস তিনেকের জন্য দোকান খুলেছে। তাতেও হিসেব ছাড়া ব্যবসা চলছে। 

এদিকে-সেদিকে চেয়ারম্যানদের নিয়ে বেশ শোরগোল হচ্ছে। এক কাপ চায়ে মিছিল। এ নিয়ম এখানে ধরা বাঁধাই। 

সারাদিন মানুষজন নানান কাজে ব্যস্ত হয়ে থাকে, তাই রাতেই চলছে পোস্টার-লিফল্যাট আর নির্বাচনী মহড়া। মিটিং-মিছিলে রাতের পর রাত চলে যাচ্ছে। এই চেয়ারম্যান এমন, ওই চেয়ারম্যান অমন এরকম শত-শত আড্ডা-আলোচনা ঘরে ঘরেই। 

ঘরে ঘরে জমছে পোস্টার-লিফলেটের স্তুপ। আর বাচ্চারা তা ভাতের মার দিয়ে বাঁশের বেড়ায় লেপ্টে দিচ্ছে। 

এবার দূর্গাপুরের মধু চেয়ারম্যান পেলো ধানের শীষ মার্কা৷ সবার ঝোঁকও তার দিকেই। বেশ দানশীল ও দয়াবান লোক বলে পরিচিত সে৷ সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে তেমন গুরুতর কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে শুনা যায়নি৷ মহেশপুর থেকে শংকর রায় চৌধুরী পেলো নৌকা মার্কা। 

আর আমজাদপুরের বাকি তিনজনকে কেউ গুণাতেই ধরে না। টাকা আর অধিপত্যের জোরে একাধিকবার নির্বাচনে হেরে যাওয়া নামধারী চেয়ারম্যান মাত্র তারা। 


নির্বাচনের আর মাত্র সপ্তাহ খানেক বাকি। এর মধ্যেই হঠাৎ একদিন রব উঠে গেলো কাদের মাতব্বরকে আর  পাওয়া যাচ্ছে না। পুরু এলাকা থমথমে অবস্থা৷ কারো মুখে টু-শব্দটাও পর্যন্ত নেই। পুলিশ-প্রশাসন পর্যন্ত খবর চলে গেছে, কাদের মাতব্বর নিখোঁজ। চায়ের দোকানগুলো হঠাৎ করে জনশূন্য হয়ে গেছে। নির্বাচনী প্রেক্ষাপট, যে কথা বলবে সেই ফাঁসবে। তাই সবাই একেবারে নিশ্চুপ, একেবারে নিরব!

চলবে.......

Comments

Popular Posts