ভেতর মানুষ
- বাসি তো।
- বাসো! কাকে? সে কে?
- সে তো বড়ই অন্ধকার। রাতের চেয়েও অন্ধকার।
রাত তো, সে চাঁদের জোছনায় অথবা
তারকার আলোয় আলোকিত হয়।
আমি মানুষের মনের মতো অন্ধকার ভালোবাসি।
- মানুষের মনের মতো অন্ধকার! সে আবার কেমন?
- হ্যা, মানুষের মনের মতো অন্ধকার।
যেখানে অস্তিত্ব হারানোর সম্ভাবনা নেই,
সাপের মতো খোলস পাল্টায়।
যেখানে অগম্য পথের সন্ধানে সবাই বেঁকে বসে।
আমি সেটাই ভালোবাসি। বুঝলে?
- সে নয় বুঝলাম। তবে কবি,
তোমার ভালোবাসায় এমন অগম্য স্বাদ কেনো?
- ওই যে "কবি" বললে, তাই।
- বুঝেছি।
- কী বুঝেছো?
- অকথ্যই থাক না মনের কথন বুঝটা!
এক পেশে ভাবের ক্ষুরধারাটা অব্যাহত থাকুক না খানিক্ষণ?
তুমি তো পেচালো ভালোবাসার কাঙ্ক্ষী।
- বুঝেছো তাহলে।
- হ্যা।
- আচ্ছা তাহলে বলো তো, রাতের গভীরতা কেমন?
- এ কেমন কথা, রাতের গভীরতা মানে?
- ওই যে সবাই যেটা ভাবে না সেটা।
- কোনটা?
- রাতের অন্ধকারে বালিশ সিক্ত করার গল্পটা।
ঘুম না আসায় ধ্রুবতারার অপেক্ষার গল্পটা।
সমাজকে উপেক্ষা করে বৃক্ষদেবীর ডালে
নিজেদের সপে দেওয়ার দৃশ্যটা।
- হে কবি, ওভাবে বলো না। অশ্রু ঝরে যাবে নয়তো।
আমার আঁখি অশ্রুতে বেশ বেখাপ্পা লাগে।
- ওই যে বললে না, চোখের অশ্রু।
সেই অশ্রু ঝেরে কখনো সে অশ্রুস্রোত মেপেছো?
- কবি হয়ে তুমি যে মাঝে মাঝে
কী সব আবোল তাবোল বলো না,
আমি বুঝে উঠতে পারি না। অশ্রুস্রোত মাপবো মানে?
একি নদীর মতো বয় নাকি যে, তার গতিবেগ মাপবো?
- তবুও। চোখের অশ্রুফোটা যখন তোমার গণ্ডদেশ বেয়ে
মনের উঠুন পেরিয়ে মৃত্তিকা ভিজিয়ে দেয়
তখন অশ্রুস্রোত মাপা যায়
যে, তা কতটুকু গতিবেগে মন ও মাটি সিক্ত করলো।
- আমি বাবা নিরপেক্ষ মানুষ।
এতো ভাবিয়ে যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিচ্ছো কেনো?
আমি তোমার মতো এতো প্যাচ বুঝি না।
- ওই যে বললাম না,
আমি পেচানো মানুষের ভালোবাসার কাঙ্ক্ষী। তাই।
- কিন্তু কবি, আমি তো সোজা-সাপ্টা মানুষ।
তোমার ভিতরটা পড়ার মতো অন্ধকার চোখ আমার নেই।
- তাই তো তোমায় যন্ত্রণা দিচ্ছিলাম। বাঁধা দিলে কেনো?
- থাক বাবা, লাগবে না।
হয়ে থাকুক সে ভালোবাসা,
তোমার উপেক্ষায় আমার অপেক্ষার মধুরতা।
~ রেদ্ওয়ান আহমদ
Comments
Post a Comment